অপারেশন গ্রিন হান্ট : গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ইউপিএ সরকারের যুদ্ধ

অপারেশন গ্রিন হান্ট : গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ইউপিএ সরকারের যুদ্ধ


মুখবন্ধ


‘মাওবাদী বিপদ’-এর (প্রধানমন্ত্রী যাকে বলেছেন ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সর্বপ্রধান বিপদ’) মোকাবিলার নামে ইউপিএ সরকার শুরু করেছে এক ব্যাপক সমর অভিযান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম এই অভিযানকে ঠিক পুরোদস্তুর যুদ্ধ বলেননি, এমনকি ‘গ্রিন হান্ট’ এই শব্দবন্ধকে প্রচার মাধ্যমের উদ্ভাবনা বলেও অভিহিত করেছেন। অার প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যেই এই অভিযানে সেনাবাহিনীকে নামানোর সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন। তবে একটা অভিযান যে চলছে তা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই — তার মাত্রা ও পরিকল্পনা দেখিয়ে দিচ্ছে যে, সেটা সার্বিকভাবে এক সামরিক অভিযান ছাড়া অন্যকিছু নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ২২৩টি জেলার ২০০০ থানাকে ঘিরে ১১টি কেন্দ্র থেকে একইসাথে অভিযান চালানোর কথা বলছে, অার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও বিমান বাহিনীর প্রধান বলছেন ঐ বাহিনীর শাখা ‘গরুড়’কে নিয়োজিত করার কথা, ‘অাত্মরক্ষার্থে’ গুলি চালানোর ক্ষমতা যাদের থাকবে। কোবরা (কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন ফর রেসলিউট অ্যাকশন) নামের বিশেষ কেন্দ্রীয় বাহিনী গঠন করে তাকে নামো হয়েছে। চিদান্বরম দানবীয় সেনা বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা অাইনকে (কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এখন যা বলবৎ রয়েছে) ‘সংশোধন’ করার কথা বলেছেন যাতে সারা ভারতেই তাকে প্রয়োগ করা যায়।

… … …

অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বিপ্লবী বামেদের সাহসের সাথে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। তবে স্বঘোষিত মাওবাদীদের হঠকারী কার্যকলাপকেও মার্জনা করার কোনো প্রশ্নই নেই, বরং গণতন্ত্রের ওপর ক্রমেই বেড়ে চলা এই যুদ্ধকে পরাস্ত করতে ব্যাপকভিত্তিক সহযোগিতা গড়ে তোলার সময় অামাদের নৈরাজ্যবাদ ও বিপ্লবী মার্কসবাদের মধ্যে ভেদরেখাকে অারও স্পষ্ট করতে হবে।


এই পুস্তিকায় অামরা ‘মাওবাদী বিপদ’-এর অতিকথা এবং ‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’-এর পিছনে অাসল যে রাজনৈতিক লক্ষ্য অাছে তাকে উন্মোচিত করার চেষ্টা করেছি। সেই সঙ্গে মাওবাদকে অামরা ঐতিহাসিক দিক থেকে ভারতীয় কমিউনিস্ট অান্দোলনে মাওবাদী ধারার একটি পর্যালোচনা ও রাজনৈতিক মূল্যায়নও হাজির করতে চেয়েছি।

Back-to-previous-article
Top