প্রেস বিবৃতি
বার্তা সম্পাদক
কলকাতা
রানাঘাট-গাংনাপুরে কনভেন্ট স্কুলে ডাকাতি ও ধর্ষণের নজিরবিহীন ঘটনায়
গাংনাপুর থানার পুলিশ অফিসার ও নদীয়া জেলা পুলিশ অাধিকারিককে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে
মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় অাসার কিছুদিন পরেই কলকাতার বুকে পার্ক স্ট্রীটে বলাৎকারের শিকার হয়েছিলেন সুজেট জর্ডান। তিন বছরের বেশি সময় ধরে বিচারের দাবিতে সুজেটের পাশাপাশি গোটা রাজ্য বারবার সোচ্চার হয়েছে। শাসকসুলভ দম্ভ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই লজ্জাজনক ঘটনার পেছনেও ‘ষড়যন্ত্রের’ ইঙ্গিত পেয়েছিলেন। সুজেট বিচার পায়নি। সুজেটের মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই গত শুক্রবার মধ্যরাতে রানাঘাটের গাংনাপুরে ক্রিশ্চান মিশনারী স্কুলে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতি। স্কুলের লকার ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ-পাট করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, ৭২ বছর বয়সী এক শিক্ষিকা সন্ন্যাসিনীকে বলাৎকার করে। ঘটনার বিবরণে গোটা রাজ্য স্তম্ভিত। সাত দিন অাগে ঐ স্কুলেই হুমকি ফোন এসেছিল এবং তা যথাযথভাবে নদীয়া পুলিশ অাধিকারিকদের জানিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঐ কনভেন্ট স্কুলের শিক্ষিকা ও কর্মচারিদের নিরাপত্তার বিন্দুমাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এক কিলোমিটারের মধ্যেই রানাঘাট থানা। দীর্ঘ তিন-চার ঘণ্টা স্কুলের মধ্যে তাণ্ডব, সন্ন্যাসিনীকে বলাৎকার ও লুঠপাট চালিয়ে অপরাধীরা বিনা বাধায় চলে যায়। এখনও পর্যন্ত কোনো অপরাধীই ধরা পড়েনি। দেশ ও রাজ্য জুড়ে নারী নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের যে ঘৃণ্য রাজনীতি শুরু হয়েছে, রানাঘাটের ঘটনার সঙ্গে তার যোগ অাছে কিনা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এটা স্পষ্ট যে ঐ দুষ্কৃতিরা ঐ কনভেন্ট স্কুলের নাড়িনক্ষত্র জানত এবং নিছক লুঠপাটের জন্যই তারা হামলা চালায়নি। ঐ সন্ন্যাসিনী শিক্ষিকাকে নির্যাতন ও হেনস্ত করার উদ্দেশ্যও তাদের ছিল। পুলিশের এই ক্রিমিনাল নেগলিজেন্সের (অপরাধসুলভ দায়িত্বহীনতা) জন্যই অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি। গাংনাপুর থানার পুলিশ অফিসর ও নদীয়ার পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ছাড়া রাজনৈতিক মতদপুষ্ট এই অপরাধীরা অাদৌ ধরা পড়বে কিনা সন্দেহ। অামরা তাই দাবি করছি গাংনাপুর থানার পুলিশ অফিসার ও নদীয়া জেলার পুলিশ অাধিকারিককে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হোক এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। রাজ্যের সমস্ত জেলায় এই ঘৃণ্য অপরাধী ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে পার্টি ও গণসংগঠনগুলোর পক্ষে থেকে বিক্ষোভ সংগঠিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
ধন্যবাদান্তে,
পার্থ ঘোষ
রাজ্য সম্পাদক